নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতারক স্বামীর বিচারের দাবিতে কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে হন্যে হয়ে ঘুরছেন এক অসহায় নারী। কিন্তু কোনো বিচার পাচ্ছেন না।
অন্যান্য দিনের মত (১০ ডিসেম্বর) রোববারও তাকে রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ভবন ও প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলীর দফতরের সামনে অসহায়ের মত ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। আর তখনই জানা যায় তার প্রতারিত হওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
ভুক্তভোগী নারী মোছা: সুরাইয়া পারভীন সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামীর নাম রাসেল ইসলাম। তিনি রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আওতাধীন পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে লোকসেড খালাসি পদে ফুয়েল সেকশনে কর্মরত আছেন। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার দিঘলকান্দী গ্রামের জয়নাল শেখের ছেলে তিনি। রাসেলের আগের আরো দুইজন স্ত্রী ছিলেন। কিন্তু আগের স্ত্রীদের কথা গোপন রেখে আমাকে বিয়ে করেন ২০১৮ সালের ২৮ মে। এরপর রাসেল রেলওয়েতে তার চাকরির জন্য ৬ লাখ টাকা দাবি করেন। তখন নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ও গহনা বিক্রি করে এবং ঋণ করে রাসেলকে ৬ লাখ টাকা পরিশোধ করি।
এরপর ২০১৯ সালে রেলওয়ের এক শ্রমীক নেতার মাধ্যমে ৬ লাখ টাকা দিয়ে রেলওয়েতে খালাসি পদে চাকরি হয় রাসেলের। চাকরি হওয়ার পরে কয়েকমাস আমার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখেন। এরপর থেকে শুরু হয় তার দুর্ব্যবহার। নানা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করেও তার সাথে সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এক পর্যায়ে গিয়ে রাসেল আমাকে তালাক দেন। ওই রেল শ্রমিক নেতা তার আত্নীয়স্বজনদের মধ্যে আরো অন্তত ২০-২৫ জনকে বিভিন্ন সময়ে রেলওয়েতে চাকরি দিয়েছেন বলে রাসেল আমাকে জানিয়েছেন।
সুরাইয়া বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন। শুধু মা আছেন। আমি এখন অসহায়। আমার সর্বশেষ মাথাগোঁজার যে সম্পদটুকু ছিল তাও রাসেলকে দিয়েছি। এ ব্যাপারে সুবিচারের আশায় রাসেলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ ও আমার ৬ লাখ টাকাসহ আরো যেসব সম্পদ তাকে দিয়েছিলাম সবকিছু ফিরে পেতে তিনি রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ও প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।
তিনি বলেন, রাসেল আমার সাথে প্রতারণা করেছেন। কারণ আমার কাছ থেকে বিপুল টাকা ও সম্পদ নিয়ে নিজের চাকরি নিয়েছেন। আর তার পরেই আবার আমাকেই তালাক দিয়েছেন। এটা প্রতারণা ছাড়া আর অন্য কিছু নয়। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জানতে মোবাইলে অভিযুক্ত রাসেল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী কুদরত-ই খুদার দফতরে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার দফতর থেকে জানানো হয়, তিনি ঢাকায় মিটিংয়ে আছেন। ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
মতিহার বার্তা ডট কম- ১০ জানুয়ারী ২০২১
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.